সাইকোটিক কমপাউন্ড ( Sycotic Co. )
সাইকোটিক কমপাউন্ড ( Sycotic Co. )
প্রসিদ্ধ চিকিৎসক হুইলার এই ঔষধটিকে টিউবারকুলার ধাতুর ঔষধ ( Tubercular Remedy ) বলিয়া নির্দেশ দিয়াছেন। টিউবারকুলার ধাতু বলিতে যক্ষারোগ নহে; এইরূপ একটি অবস্থা, যাহাতে রোগী অতি সামান্য কারণেই রোগাক্রান্ত হইয়া পড়ে এবং ক্রমশ শীর্ণ হইতে থাকে। এই ঔষধের রোগী সব অবস্থাতেই রক্তহীন এবং তাহার মুখশ্রী বিবর্ণ থাকে। এই কথাটি আবার কিশোর ও কিশোরীদের পক্ষেই বিশেষভাবে প্রযোজ্য।এই ঔষধটির প্রধান লক্ষণ উত্তেজনা এবং সেই উত্তেজনার বিকাশ প্রায়শঃই মস্তিস্ক ঝিল্লীতে। রোগী সর্বদাই উত্তেজিত, সর্বদাই খিট্ খিটে (লাইকোপোডিয়াম), অন্ধকারে থাকিতে ভয় করে, অাবার একা থাকিতেও ভয় করে, মুখের পেশীসমূহ নাচে, চোখের পাতা নাচে।
মস্তিস্ক আবরকের উত্তেজনার ফলে, শিরঃপীড়া অথবা মাথায় ভারি বোধ করা সর্বদাই লাগিয়া থাকে। বিশেষ করিয়া শিশুদের এই লক্ষণ থাকিলে, তাহাকে টিউবারকুলার মেনিঞ্জাইটিসের পূর্বাভাষ বলিয়া মনে করা উচিত (হেলিবোরাস)। রাত্রে মাথায় ঘর্ম হওয়া একটি সিদ্ধিপ্রদ লক্ষণ। এরূপ রোগীর বিশেষতঃ শিশুরোগীর সমগ্র অন্ত্রপথের শ্লৈম্মিক ঝিল্লীতে উপদাহিতা উপস্থিত হয়, সে দুর্গন্ধ, পাতলা, ক্ষতকর মলত্যাগ করে। বিছানা হইতে উঠিবার সাথে সাথেই মলবেগ উপস্থিত হয়, ডিম খাইলেই তাহার লক্ষণসমূহের বৃদ্ধি হয়, কখন কখন বমির ভাব উপস্থিত হয় ( ফেরাম মেট)
শ্লৈম্মিক ঝিল্লীও প্রদাহিত হয় বলিয়া নাকের সর্দি ও কাশি লাগিয়া থাকে, গলদেশে টনসিলদ্বায়ও প্রদাহিত হইতে দেখা যায়। রাত্রি দুইটার সময় কষ্টকর কাশি হওয়া একটি নির্দেশক লক্ষণ।
অনেক ক্ষেত্রে রাত্রের লক্ষণ থাকে, ঠান্ডা আবহাওয়ায় ও বিশ্রামকালে ঐ ব্রাথা বাড়ে (রাস টক্স); পায়ের তলদেশে চলিবার সময় ব্যাথা লাগে, হাড়ের মধ্যে বেদনা হয়।
এই ঔষধ প্রয়োগের পর শিশুদিগের দেহে পানিবসন্তের গুটিকার ন্যায় জলপূর্ণ উদ্ভেদ সকল উপস্থিত হেইতে পারে-ইহা শুভ লক্ষণ। অনেক সময়ে ঐ জাতীয় জলপূর্ণ উদ্ভেদে পুঁজ হইতেও দেখা যাইতে পারে।
সমগ্র মূত্রপথে ঔষধটির ক্রিয়া আছে। মূত্রপথের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর উত্তেজনাবশতঃ মূত্রে এলবুমেন, বৃক্কক প্রদাহ, অপত্যপথের প্রদাহ, লিঙ্গমুন্ডের প্রদাহ প্রভৃতি উপস্থিত হইতে পারে। মহিলাগণের ঋতুকালে বাম ওভারি স্থানে বেদনা দেখা দেয় এবঙ প্রচুর প্রদর স্রাব হইতে থাকে।
মহাত্মা ম্যানিম্যান Sycotic miasm শব্দের দ্বারা গণোরিয়া বিষ বুঝিয়াছিলেন কিন্তু গণোরিয়া জীবাণু ব্যতীত অন্য বহুপ্রকার জীবানু দ্বারাও মূত্রপথের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর প্রদাহ উপস্থিত হইতে পারে, সুতরাং আজিকার যুগে সাইকোসিস অর্থে মূত্রপথের উপদাহ বলিলেই ভাল হয়।
এই ঔষধটির প্রধান সহযোগী ঔষধ থুজা এবং তার পর এসিড নাইট্রিক, এন্ট্রিম টার্ট, নেট্রাম সালফ ও রাস টক্স, কিন্তু ব্যাসিলিনাম ঔষধটিও বিশেষভাবে মনে রাখা কর্তব্য।
কোন মন্তব্য নেই