ইগ্নেশিয়া আমারা ( Ignatia Amara ) [ সেন্ট ইগনেটিয়াস বিন নামক ফলের বীজ ]
ইগ্নেশিয়া ( Ignatia ) [ সেন্ট ইগনেটিয়াস বিন নামক ফলের বীজ ]
স্নায়বিক প্রকৃতির রোগীর পক্ষে বিশেষভাবে উপযোগী। অত্যানুভূতিপ্রবণ, সহজেই উত্তেজিত হন এরূপ স্ত্রীলোক। কাল চুল এবং কাল গাত্রচার্ম কিন্তু কোমল প্রকৃতি; সবকিছুই দ্রুত বুঝেন, দ্রুত কার্য করেন। গৌরবর্ণা, নমনীয়, ক্রন্দনশীল কিন্তু ধীর ও অব্যবস্থিতচিত্ত পালসেটিলা রোগিনীর সম্পূর্ণ বিপরীত।
এই ঔষধের সবকিছুতেই অতিশয় অসঙ্গতি দেখিতে পাওয়া যায়-কর্ণের মধ্যে গর্জন শব্দ কিন্তু সঙ্গীতে উহার উপশম হয; অর্শের যন্ত্রণা কিন্তু চলিলে উহার উপশম হয়; গলার মধ্যে বেদনা কিন্তু গিলিবার সময় ঐ বেদনা শন্তি; পাকস্থলীতে শূণ্যতাবোধ কিন্তু আহারে উহার উপশম হয় না; কাশি কিন্তু যত কাশে ততিই উহার বৃদ্ধি হয়; ভ্রমনকালে চুপ করিয়া দাঁড়াইলেই কাশি আরম্ভ হয় (এষ্টেকাস-ক্লেব); দুঃখের ব্যাপারে আক্ষেপিকভাবে হাসিয়া উঠে; ধ্বজভঙ্গ কিন্তু তৎসহ সঙ্গমেচ্ছা; জ্বরের শীতের সময় পিপাসা কিন্ত উত্তাপের সময় পিপাসা থাকে না; বিশ্রামকালে মুখমন্ডলের বর্ণ পরিবর্তিত হয়।
অতিদ্রুত, এমনকি অবিশ্বাস্য অল্প সময়ের মধ্যে মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হয়; আনন্দ পরিবর্তিত হইয়া দুঃখ, হাসি পরিবর্তিত হইয়া ক্রন্দনের সৃষ্টি করে (কফিয়া, ক্রোকাস, নাক্স মস্ক) খামখেয়ালী প্রকৃতি।
দীর্ঘকালের চাপিয়া রাখা দুঃখের ফলে, মানসিক ও দৈহিক উভয়ভাবে অবসন্ন ব্যক্তি।
অনিচ্ছায় দীর্ঘশ্বাস ফেলে (ল্যাকে), তৎসহ পাকায়-গহ্বরে এক প্রকার দূর্বলকর শূন্যতাবোধ কিন্তু আহারে উহার উপশম হয় না ( হাইড্রাষ্টি, সিপিয়া ) ।
রাগ, শোক অথবা হতাশ প্রেমের কুফল ( ক্যাল্ক ফস, হায়স )। কাল্পনিক দুঃখের উপর ভিত্তি করিয়া নির্জনে চিন্তা করিতে থাকে।
একাকী থাকিতে ইচ্ছা করে।
সহজেই অভিভূত হয়, তীক্ষ বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি।
অস্থির, অধৈর্য, অস্থিরচিত্ত, কলহপ্রিয়।
মনভাল থাকিলে অমায়িক কিন্তু সামান্য উত্তেজনায় বিচলিত হইয়া উঠে; সহজেই অপমানিত বোধ করে।
সামান্য দোষ ধরায় বা প্রতিবাদে ক্রদ্ধ হইয়া উঠে এবং আপন মনে গুমরাইতে থাকে।
শিশুকে তাড়না করিলে, ভৎসনা করিলে অথবা বিছনায় শোয়াইয়া দিলে অসুস্থ হইয়া পড়ে এবং ঘুমের মধ্যে তড়কা হয়।
দুঃসংবাদ সঞ্চিত অসন্তোষ হইতে বিরক্তি, চাপিয়া রাখা মানসিক কষ্ট; লজ্জাকর ব্যাপার, অপমানবোধ হইতে যে-কোন পীড়া (ষ্ট্যাফিস)। শিরঃরপীড়া-যেন মাথার পার্শ্ব দিয়া একটি পেরেক বিদ্ধ করা হইতেছে, ঐ পার্শে চাপিয়া শুইলে উপশম (কফিয়া, নাক্স, থুজা)।
তামাকের গন্ধ সহ্য করিতে পারে না, ধুমপানে অথবা তামাকের ধূমের গন্ধে শিরঃপীড়া জন্মে অথবা উহার বৃদ্ধি হয়।
কথা বলার অথবা চর্বণ করার সময় গালের মধ্যে কামড়ািইয়া ফেলে। আহার কালে মুখমন্ডলের কোন একটি ক্ষুদ্র স্থানে ঘর্ম হয়।
বেদনার অত্যানুভূতি (কফিয়া, ক্যামো )।
কোষ্ঠবদ্ধতা-গাড়ী চড়ার কালে পক্ষাঘাতিক প্রকৃতির, তৎসহ অতিশয় মলবেগ, উহার উপর পেটেই অধিক অনুভূত হয় (ভিরেট্রাম)। অত্যান্ত বেদনা রোগী পায়খানা্য় যাইতে ভয় পায়; যে-সকল স্ত্রীলোক কফিপানে অভ্যস্ত তাহাদের কোষ্ঠবদ্ধতা। মলত্যাগকালে সামান্য কুন্থনে, অবনত হইলে অথবা কোন ভারী জিনিস তুলিতে গেলে সরলান্ত্র বাহির হইয়া পড়ে (নাই এসি, পডো, রুটা ); মল যখন তরল থাকে তখন বৃদ্ধি।
অর্শরোগ-প্রতিবার মলত্যাগকালে সরলান্ত্র নির্গমন উহা তাত দিয়া স্বস্থানে স্থাপিত করিতে হয়; সরলান্ত্রে তীর সূচীবিদ্ধবৎ যন্ত্রণা, ঐ বেদনা উপর দিকে ধাবিত হয় ( নাই এসি)। মলত্যাগের কয়েক ঘন্টা পর পর্যন্ত বৃদ্ধি (র্যাটান, সালফ)।
নিদ্রাকালে সমস্ত শরীর বা বিশেষে একটি অঙ্গ উৎক্ষিপ্ত হয়, ঝাঁকি দিয়া উঠে, এমনকি আক্ষেপ দেখা দেয়।
শরীরের কোন ক্ষুদ্র এবং সীমাবদ্ধ স্থানে বেদনা।
জ্বর-শীতের সময় মুখমন্ডল লঅল হইয়া উঠে (ফেরাম); শীত, কেবলমাত্র শীতের সময় পিপাসা, বাহ্যিক উত্তাপে উপশম; জ্বরের উত্তাপ অবস্থায় তৃষ্ণাহীনতা, আবৃত থাকলে বৃদ্ধি।
রোগ ঠিক নির্দিষ্ট সময়টিতে উপস্থিত হয়।
রক্ত ও পিত্তপ্রধান পুরুষের রোগের সহিত নাক্স ভমিকার যে সম্বন্ধ, স্ত্রীলোকদিগের রোগের সহিত ইগ্নেশিয়ার সম্বন্ধ তদনুরূপ।
সম্বন্ধ- বিসদৃশ-কফিয়া, নাক্স, ট্যাবে।
ইগ্নেশিয়া অপব্যবহারের কুফল পালস দ্বারা বিদূরিত হয়।
উপচয়-তামাকে, কফিপানে, র্যান্ডিমদ্যে, স্পর্শে, সঞ্চালনে, উগ্র গন্ধে, মানসিক উত্তেজনায়, দুঃখে।
উপশম-উত্তাপে, জোরে চাপ দিলে (সিঙ্কোনা), গলাধঃকরণে, চলাফেরায়।
কোন মন্তব্য নেই