Header Ads

অরাম মেটালিকাম (Aurum Metallicum) [অরাম Aurum-m].

অরাম মেটালিকাম (Aurum Metallicum)
ডা. রাতুল মাহমুদ সজল (বি.এইচিএম.এস, প্রভাষক - রহনপুর হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, বাংলাদেশ, মোবাইল ঃ ০১৭২০৬৬৭১১৭)
আপনারা সকলেই জানেন, অরাম মেটালিকাম “খঁাটি সোনা” থেকে প্রস্তুত। প্রাচীন কাল থেকেই চিকিৎসা ক্ষেত্রে সোনার ব্যবহার চলে আসছে। প্রথমে এটা আরবদের আয়ূর্বেদ চিকিৎসকরা ব্যবহার করতেন, স্যার ক্রিশ্চিয়ান ফ্রেডরিক স্যামুয়েল হানেম্যান এটা Prove করে হোমিওপ্যাথিতে Include করেছেন। এই অসাধারন ঔষধটি জীবনের যে কোন ক্ষেত্রে বা যে কোন রোগে ব্যবহার হতে পারে, যদি লক্ষন মেলে।
ম্যাটেরিয়া মেডিকায় অরাম মেটালিকাম পড়তে গেলে প্রথমেই যে কথাটি আসে তাহলো, “ আত্মহত্যার ইচ্ছা বা প্রবনতা, এবং রোগীর নিজের কাছে তার জীবন বোঝার মতো মনে হওয়া।” প্রথমেই লিখা থাকে বলে চিকিৎসক এবং শিক্ষার্থীরা এই লক্ষনটিকে খুব প্রাধান্য দেন এবং গুরুত্বের সাথে দেখেন। নি:সন্দেহে এটি একটি গুরুত্বপূর্ন লক্ষন কিন্তু তার পূর্বে কিছু অবস্থা বা Condition আছে যা জানা খুব প্রয়োজন। “আত্মহত্যার ইচ্ছা” অরামের প্রথম সারির লক্ষন; কিন্তু অবশ্যই শেষে আসা লক্ষন। অরামের রোগী কেমন এখন তা নিয়েই আমরা সামান্য আলোচনা করবো।
শিশু অরাম ঃ আপনি যদি গভীর দৃষ্টির সাথে দেখে থাকেন, তবে বহু শিশুর আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট আপনার কাছে একদম সহজ হয়ে যাবে। সিনা শিশু কেমন তা আপনি জানেন, ক্যামোমিলার শিশু কেমন তা আপনি জানেন, পালসেটিলার শিশু কেমন তাও আপনার জানা আছে। এর কারন হচ্ছে, আপনি এই ঔষধগুলোর শিশু চরিত্র সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখেন। অরাম মেটালিকাম শিশুদের বৈশিষ্ট হচ্ছে এরা খুব গম্ভীর এবং রিজার্ভ। আপনি যদি একসাথে এক হাজার শিশু দেখেন, তবুও সবার ভীড়ে আপনি এইসব গম্ভীর এবং অসাধারন ব্যাক্তিত্বসম্পন্ন শিশুদের আলাদাভাবে চিনতে পারবেন।এসব শিশু সহজে কারো সাথে মেশেনা, হৈ-চৈ করে বন্ধুদের সাথে দৌড়-ঝাঁপ করে না, নিজেকে অন্যদের কাছ থেকে পৃথক করার একটা প্রবনতা এদের মাঝে আছে। এরা প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন এবং উচ্চাভিলাষি। ক্লাশে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করার জন্য এরা যথেষ্ট পরিশ্রম করে,- এরা অধ্যাবসায়ী। নিজের ব্যক্তিত্ব, আত্মসম্মানবোধ এসব শিশুদের এত প্রখর যে ক্লাস টিচার যদি এদের বেত মারেন তবে এরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে (Autometicaly) তাদের হাত টেনে নেবেনা, বরং চুপ করে অনড় দাঁড়িয়ে থাকবে, মুখ দিয়ে “উহ” শব্দটিও করবে না। যারা জানেন না, তাঁরা এসব শিশুকে “পালসেটিলা” বলে ভুল করতে পারেন, কিন্তু এসব শিশু সাধারনত অরামের হয়।
এসব শিশুদের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হলো, এরা ভীষন আবেগপ্রবন। যদিও এদের আবেগের বহি:প্রকাশ নেই। বাইরে থেকে আপনি বুঝতে পারবেন না, এরা কত কঠোরতার সাথে এদের আবেগকে নিয়ন্ত্রন করে।
এসব শিশুদের কেউ কোন বিরূপ মন্তব্য করলে বা উপহাস করলে বা দৈহিক-মানসিক অত্যাচার করলে এদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এদের প্রচন্ড আবেগী মন এ সমস্ত কষ্ট সহ্য করতে পারে না, ভেতর ভেতর এরা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। ছোটখাটো মানসিক আঘাত এদের ভেতর যত তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে সাধারনত: আর দশটা শিশুদের ভেতর ততটা করে না।
মজার ব্যপার হলো, এসব শিশু নিজের আবেগের যত মূল্য দেয়- অন্যের আবেগের তত মূল্য এরা দেয় না। আপনারা দেখবেন, চায়নার শিশুও আবেগপ্রবন এবং আবেগের প্রকাশ কম, তবে এরা নিজের এবং অন্যের আবেগের মূল্য দেয়। চায়নার শিশু আপনাকে ভালবাসবে - কিন্তু কখনো এরা মুখে তা আপনাকে বলবে না; কিন্তু আপনি অসুস্থ হলে এরা রাত জেগে আপনার পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে, আপনি বুঝতেও পারবেন না, সে আপনার জন্য কত কেঁদেছে। আপনার জন্মদিন এলে আপনাকে অবাক করে দিয়ে আপনাকে সুন্দর একটা ফুল দিয়ে গম্ভীর মুখে বলবে, “Happy birthday to you." আপনি আশ্চর্য্য হয়ে ভাববেন “বাচ্চাটা আমার জন্মদিন মনে রাখলো কিভাবে  “ - এতটা আবেগ এবং আন্তরিকতা আপনি অরাম শিশুর মধ্যে পাবেন না। তবে এরা আবেগী এবং ভালবাসাকাতর এবং অবশ্যই চাপা। এসকল শিশুরা মানসিক আঘাত পেলে ভেঙ্গে পড়ে, নিজের শ্রেষ্ঠত্ব, নিজের গুন, নিজের ভালো দিকগুলো নিয়ে তাদের মনে সন্দেহ জন্মাতে শুরু করে। এরকম আঘাত কয়েকবার পেলেই একমসয় সে মনে করতে শুরু করে যে, এই পৃথিবীটা জীবনযাপনের উপযুক্ত নয়।
কিশোর অরাম ঃ এই বোধ এবং চিন্তাধারা (পৃথিবী বসবাসের উপযুক্ত সাথান নয়) অরামের কিশোরের মাঝে গম্ভীরতার সাথে আরেকটি জিনিস যোগ করে, তাহলো, “বিষন্নতা।” ব্যাক্তি অরাম বিষন্ন, মনমরা এবং বিমর্ষ। কিন্তু অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, এত ভৎসনা, এত বিদ্রুপ, এত বিষন্নতা এদের লেখাপড়ায়, এদের অধ্যাবসায়, এদের কাজে খুব বেশী নেতিবাচক প্রভাব ফ্যালে না, বরং এরা আরো বেশী লেখাপড়া, আরো বেশী অধ্যাবসায়, আরো বেশী কাজে আত্মনিবেশ করে। প্রকৃতপক্ষে এরা নিজের বিমর্ষতা, হতাশাগ্রস্থতা, অন্যদের কাছে সযত্মে লুকিয়ে রাখে।বিষন্নতা ভুলে থাকতে, মনের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে এরা নিজেদের সবসময় কোন না কোন কাজে নিয়োজিত রাখে- এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হয় মানসিক কাজ। মনে রাখবেন, ব্যক্তি অরাম খুব কাজ পাগল মানুষ; অবশ্য কেবলমাত্র বিষন্নতা ভুলে থাকতেই যে সে কাজে নিয়োজিত থাকে - সবক্ষেত্রে তা নয়, উচ্চাভিলাষও তার এত বেশী কাজ করার আরেকটি কারন। অরামের রোগী সবসময়ই উচ্চাভিলাসী, কর্মজীবনে কাজকে এরা সর্বাধিক প্রাধন্য দেয়। কাজ করে, কাজকে নিয়ে ভাবে বলে নিজের সম্পর্কে এদের একটা অতিরঞ্জিত ধারনার সৃষ্টি হয় যে, এরা অবশ্যই অপরের চেয়ে ভালো বোঝে, ভালো করে এবং ভালো জানে। নিজেদের এরা (সোনার মতোই) দামী ভাবে। একারনে,“তোষামোদ এবং প্রসংশা পাওয়া আমার প্রাপ্য” - এবোধ এদের মধ্যে সৃষ্টি হয়, কিন্তু তা না পেলে এদের ভেতর তীব্র ক্ষোভ এবং রাগের সৃষ্টি হয়; যদিও এই ক্ষোভ তারা সরাসরি প্রকাশ করে না। কিন্তু না পাওয়ার বেদনা এদের মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফ্যালে। তার মনে হয়, পৃথিবীতে কেউ তাকে বোঝে না, কেউ তাকে মূল্যায়ন করে না, কেউ তাকে ভালবাসে না, তার কাজের কদর কেউ করে না। আসলে এই পৃথিবীটাই একটা বাজে যায়গা - এখানকার মানুষগুলোও বাজে, জায়গাটাও বাজে।
তরুন অরাম ঃ এই ধারনার বশবর্তী হয়ে, এরা নিজেকে তার পরিবার থেকে, তার সমাজ এবং বন্ধুবান্ধব থেকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে নেয়। জীবনের সুন্দর, হাস্যচ্ছল, প্রানবন্ত সময়গুলো তাদের কাছে বিবর্ন এবং ফ্যাকাশে মনে হয়। সুন্দর, সুখময় স্মৃতি রোমন্থন এরা করে না। জীবনের কুৎসিত এবং দু:খময় স্মৃতিগুলোই ঘুরে ঘুরে মনের পর্দায় আসে। কর্মময় জীবনে যা কিছু সঠিক এবং যুগোপযোগী ছিল অথবা ভালো কিছু ছিল সে সবই নিস্ফল বলে মনে হয়অ মনে হয়, অতীতের সবকিছুই বৃথা। এ ভাবনা ভেতর ভেতর কাকে নিস্পেষিত করে। ধীরে ধীরে নিজের প্রতি একটা ঘৃনা, একটা অপরাধবোধ তোকে গ্রাস করে। এ সময়টাই অরাম মেটালিকামের সবচেয়ে দূর্যোগপূর্ন সময়। এ সময় সে যে কোন একটি পথে ধাবিত হতে পারে, প্রথমত: মারাত্মক ধর্মানুরাগ যা তাকে বাধ্য করে ঘন্টার পর ঘন্টা ইবাদত করতে। ইবাদতে একটি কথাই সে বারবার বলে,“আল্লাহ, তুমি আমাকে রক্ষা করো” অর্থাৎ উদ্দেশ্য, অতীতের সকল ভুল (?) কর্ম এবং চারিদিকে যে আঁধার ও পঙ্কিলতা তা থেকে উদ্ধার পাওয়া।দ্বিতীয়ত: সে সন্ত্রাসী পথ বেছে নিতে পারে। “এ সমাজকে বদলে দাও” এ স্লোগানই যার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। মনে রাখবেন, মনোবিঞ্জানীদের মতে, ধর্ম
ন্ধতা ও সন্ত্রাসবাদ একই উৎসজাত। জন্মগতভাবে যেহেতু অরাম মেটালিকাম খুব কর্মোদ্যোগী, সুতরাং যে পথেই যাক্ সে পথেই তারা ক্ষুরধার প্রতিভার ছাপ রাখে। একবার কোন লক্ষ্য স্থির করলে, সে লক্ষ্য অর্জন পর্যন্ত এরা থেমে থাকে না, তা যত ভয়ংকর এবং ঝুঁকিপূর্ন হোক না কেন।ঝুঁকিপূর্ন কাজে এরা একধরনের রোমঞ্চ (Thrill) অনুভব করে।

সে জানে, তার অতিরিক্ত উর্ধ্বগমন (উচ্চাভিলাষ), তার নিম্নপতন (আত্মহত্যা) এর কারন হতে পারে, তবুও সে নিজেকে দমন করতে পারে না। অরাম মেটালিকিামের রোগী আত্মহত্যা করতে চায়, বিশেষ করে উঁচু স্থান থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে - এবং নিজেকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে গিয়ে নীচের কালো অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়া- বিষয়টির মধ্যে যেন সুক্ষ্ম একটা মিল আছে। সন্ত্রাসী পথ বেছে নিলে অরাম মেটালিকাম সত্যই ত্রাস সৃষ্টিকারী একজন সন্ত্রাসী হয়ে ওঠে, এবং হ্যাঁ- এ সময় তারা প্রেমে পড়তে পারে।
যুবক অরাম ঃ অরাম মেটালিকামের সাথে প্রেম েএবং ভালবাসার সম্পর্ক যেন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ইগ্নেশিয়া, নেট্রাম মিউর, ক্যাল্কেরিয়া ফসের মতো এরাও ভালবাসার কাঙ্গাল। এবং প্রেম-ভালবাসার ক্ষেত্রে যে সকল অঙ্গগুলি বেশী গুরুত্বপূর্ন, যেমন হৃদয় (Heart), লিঙ্গ (Penis),জরায়ু (Uterus), অন্ড (Testis), অন্ডকোষ (Scrotum), ডিম্বাশয় (Overy), জননাঙ্গ (Genital)- সে সকল অঙ্গে আমরা অরাম মেট এর রোগলক্ষন প্রকাশ পেতে দেখি।
এইসব অরাম যুবক অসম্ভব আবেগী এবং ভালবাসার কাঙ্গাল বলে প্রেম এদের জীবনে অপার আনন্দ এবং সুখের বন্যা নিয়ে আসে। যদিও থেকে থেকেই এরা সেইসব দু:খময় স্মৃতিরোমন্থন করে, যা তাদের ব্যথিত করেছিল। অর্থাৎ সুখ এবং আনন্দময় জীবনের মাঝে থেকেও এদের পেছনে যেন দু:খের একটা করুন আবহ সঙ্গিত সবসময় বাজে। প্রেমিকাকে এরা হৃদয় দিয়েই ভালবাসে, কিন্তু প্রেমিকার সামান্য একটু বিদ্রুপাত্মক কথা বা অভিমান বা অন্য পুরুষের সাথে হেসে কথা বলা, এদের মধ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।এরা জানে, প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক ছেদ হলে এরা মারাত্মক আঘাত পাবে, কিন্তু তারপরেও পেমিকার সাথে সে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং নিজে মানসিকভাবে একেবারে ভেঙ্গে পড়ে। নিজেকে অসহায়, বিবর্জিত এবং পৃথিবীর সবচেয়ে দু:খী মানুষ ভেবে এসময় তারা অন্ধকার এবং একাকিত্বময় জীবনযাপন শুরু করে। প্রায় ক্ষেত্রেই এইসময় এসব যুবক মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। সে মনেপ্রানে কামনা করে, তার হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকা তার কাছে ফিরে আসুক- কিন্তু সেই প্রেমিকা যদি তার কাছে তার ভুল ভাঙ্গাতে আসে- সে ক্ষেপে যায়, “কেন আমার কাছে এসেছো ? ফিরে যাও ! তোমার মুখ আমি আর দেখতে চাই না-” - তারপর আবার অন্তর জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরে। এসময় রাতের পর রাত এরা না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়। সিগারেটের পর সিগারেট বা গ্লাসের পর গ্লাস মদ এদের বিনিদ্র রজনীর সঙ্গি হয়। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন জিজ্ঞাসা করবে, “ তোমার কি হয়েছে ? কেন এভাবে নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে ফেলছো ? “ এ প্রশ্নের জবাব এরা দেবে না। প্রকাশ করবে না যে আসলে কেন সে এমন করছে। এই প্রকাশ না করার দুই করম কারন থাকে, এক, সে মনে করে “প্রকাশ করে কি হবে ? এরা কি আমাকে কোন সাহায্য করতে পারবে ?”, দুই, সে ভয় পায়, প্রকাশ করলে তার দূর্বলতা ফাঁস হয়ে যাবে এবং যুক্তি তর্কে সে হেরে যাবে। অর্থাৎ তার বর্তমান অবস্থা এবং কর্মকান্ড নিয়ে তার সাথে যদি কারো তর্ক হয় তবে নিজের স্বপক্ষে কোন যুক্তি সে খাড়া করতে পারবে না- এটা তার খুব ভালোভাবেই জানা আছে। তারচেয়ে বরং “ আমাকে আমার মতো থাকতে দাও”- এই সংক্ষিপ্ত উত্তর দেয়ায় ঢেড় ভালো। এ কারনে সাধারনত: অরামের রোগী যুক্তিতর্ক পছন্দ কম করে। কিন্তু এই যে, নিজকে তিলে তিলে শেষ করে দেয়া- এটা থেকে সে ফিরে আসতে পারে না। অসলে, অরামের রোগী নিজেকে কষ্ট দিয়ে একধরনের সুখ অনুভব করে। যা তার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে দৈহিক ক্ষতি- তাই-ই সে বারবার করতে পছন্দ করে।
একটি অরাম মেটালিকামের হাঁপানী রোগী ঝুমঝুমে বৃষ্টির মধ্যে বেরিয়ে পড়তে পারে-, সে জানে যে তাতে তার শ্বাসকষ্ট বাড়ার ঝুঁকি আছে-, তবুও। তারপর সত্যি সত্যিই মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হলে যে সে ঔষধ খাবে না তা নয়, তবে এই যে প্রবনতাগুলো, এগুলো অরাম মেটালিকাম রোগীর মধ্যে প্রবল।
প্রাপ্তবয়স্ক অরাম ঃ ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে অরাম রোগী সৎ, কর্তব্য পরায়ন, কর্মঠ। জীবনের সকল স্তরে এরা সততা ও ন্যায়-নিষ্ঠতায় বিশ্বাস করে। নিজে যেমন সকলের সাথে যুক্তিসঙ্গত ও ন্যায্য বিচার করে-, নিজেও আশা করে যে সকলে তার সাথে ন্যায় ও ন্যায্য আচরণ করবে, যদিও তার ধারণায়, তার সাথে কেউ ন্যায্য আচরণ করেনি / করে না।
এই গুনগুলোর কারনে এরা কর্মজীবনে অনেক উঁচু স্থান অধিকার করে-, কিন্তু উর্ধ্বতন কর্মকর্তার একটু কড়া সমালোচনা বা বক্রচাহনি বা ধমক এদের ভেতর ভেতর খুব পিড়ীত করে।
(চলবে)..

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.